আমরা বিভিন্ন সভা-সমিতিতে ও আলোচনা-চক্রে ভারতীয় যুবকদের চরিত্রের উৎকর্ষ সাধনের কথা বলি, কারণ চরিত্রই পশুকে মানুষে এবং মানুষকে দেবত্বে উন্নীত করে। চরিত্রের উৎকর্ষ সাধনের কথা শুনলে অনেক যুবক বন্ধুই মুচকি হাসেন এবং বিরূপ মন্তব্য করেন। ইতিহাসকে অস্বীকার করে যাঁরা কোন মতবাদে বিশ্বাসী হন এবং যাঁরা বিশৃঙ্খল চিন্তাধারায় অল্প বয়স থেকে গড়ে ওঠেন তাঁরাই চরিত্রোন্নতির নেতিবাচক দিকটি দেখতে পান। চরিত্র বলতে কি বোঝায় এবং দেশ বা জাতি গঠনে এর কি ভূমিকা এটাও বর্তমান শিক্ষাপদ্ধতি ছাত্র সমাজের সামনে তুলে ধরে না। যেন তেন প্রকারেণ পরীক্ষায় পাশ করাটাই আজ তাঁদের কাছে মুখ্য উদ্দেশ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। জীবন সংগ্রামে দাঁড়াতে না পেরে একে অপরকে আমরা দোষারোপ করছি। নতুন ভরাট করা পুকুরের ওপর আমরা প্রাসাদ তোলবার চেষ্টা করছি। বাঁচবার কোন রাস্তা নেই, বিপদ দুদিক থেকেই আসবে, চরিত্র গঠন না করে যদি আমরা অর্থনৈতিক ও সামাজিক সমস্যাগুলি মেটাতে যাই তবে ঐ পুকুর ভরাট করা জমির ওপর প্রাসাদ তোলাই হবে। অর্থাৎ একদিকে আমাদের সকল চেষ্টাই ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে, অন্যদিকে তার ফল ভুগবে আমাদের ভবিষ্যৎ উত্তরাধিকারীগণ। আমরা ভুলে যাই যে জাতির চরিত্র নির্ভর করে ব্যক্তির চরিত্রের ওপর। অভ্যাসের সমষ্টিকে বলা হয় চরিত্র। আমরা প্রতি মুহুর্তে যে কাজ করি, যে চিন্তা করি তার একটি ছাপ আমাদের মনে প্রতিনিয়ত পড়ছে এবং এই ঘণীভূত ছাপ থেকে সংস্কার সৃষ্টি হয়। তার সমষ্টিকে বলে চরিত্র। মৃতশিল্পী কাঁচামাটি দিয়ে যেমন সুন্দর প্রতিমা গড়েন, জীবন-শিল্পীও ঠিক তেমনভাবে নিজের চরিত্র বা সংস্কার গড়েন। শুভ ও লোককল্যাণকর কাজ ও চিন্তার দ্বারাই এই চরিত্র গড়ে ওঠে। এবং এটাই একমাত্র বাস্তবধর্মী পদ্ধতি।
পৃথিবীতে চরিত্রবান আত্মবিশ্বাসী মানুষেরাই ইতিহাস সৃষ্টি করেন। তাঁদের জীবনে প্রখর ব্যক্তিত্বের যে পরিচয় আমরা পাই, তা গড়ে ওঠে তাঁদের চারিত্রিক দৃঢ়তার ওপর ভিত্তি করে। ইতিহাসে দেখি একটা জাতির শিল্প সাহিত্য ও সংস্কৃতির ওপর কিভাবে প্রভাব বিস্তার করে সেই জাতির চরিত্র। কিন্তু চরিত্র রাতারাতি গড়ার জিনিস নয়। শিল্পীর তুলিতে ছবি যেমন ধীরে ধীরে প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে, অনলস চেষ্টা ও ঐকান্তিকতায় মানুষও তেমন ধীরে ধীরে তার চরিত্র গড়ে তোলে। ব্যক্তি মানুষের সভ্যতা ও কৃষ্টির প্রতিফলন লক্ষ্য করি আমরা তার সমাজ ও রাষ্ট্রে। ইতিহাস সৃষ্টিকারী ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন মানুষের জীবন কাহিনী পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে যে, চরিত্রের অপূর্ব মাধুর্যে তাঁদের জীবন গঠিত। যুগান্তকারী ব্যক্তিত্বের বিকাশ দেখি আমরা বুদ্ধ, খ্রীষ্ট, চৈতন্য ও শ্রীরামকৃষ্ণের চরিত্রে। একমাত্র সত্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েই তাঁরা এরূপ চরিত্রের অধিকারী হয়েছেন। স্বামীজী বুদ্ধকে জগতের শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব-সম্পন্ন মানুষ বলে অভিহিত করেছেন। কারণ তিনি ছিলেন সম্পূর্ণ নিঃস্বার্থ এবং একমাত্র লোক কল্যাণেই তিনি দেহ ধারণ করেছিলেন। পৃথিবী সম্পূর্ণ লোকশূন্য হলেও এঁদের চরিত্রের ভাবগুলি আকাশে-বাতাসে অনুরণিত হতে থাকবে। দেশ-কাল-পাত্র নির্বিশেষে আজ বিশ্বের বহু মানুষ - এঁদের ভাবধারায় নিজ নিজ চরিত্র গড়তে প্রয়াস পান। লোকোত্তর মহাপুরুষেরা জাতির কাছে রেখে যান তাঁদের অতুলনীয় চরিত্র ; এবং এটা ভুললে চলবে না যে ব্যক্তিত্ব যেমন নির্ভর করে চরিত্রের ওপর, সেরূপ চরিত্র নির্ভর করে সত্যনিষ্ঠার ওপর। কায়-মনো-বাক্যে একমাত্র সত্যকে আঁকড়ে থাকলেই এরূপ কালজয়ী বৈপ্লবিক ব্যক্তিত্ব গড়ে ওঠে। এঁরা প্রত্যেকেই ছিলেন। মহান বিপ্লবী। কারণ অন্যায় ও অসত্যের বিরুদ্ধে মন ও ভাবজগতে জীবনের শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত এঁরা ব্যয় করেছেন।
চরিত্রহীন ব্যক্তিত্ব কখনই হতে পারে না সেজন্য মহামণ্ডল স্বামী বিবেকানন্দের “চরিত্র গঠনকারী ও মনুষ্যত্ব-উন্মেষক” শিক্ষার ওপর গুরুত্ব দেয়। চরিত্রই যে ব্যক্তিত্বের ভিত্তি এটা সর্বজন স্বীকৃত সত্য।
We talk about the character development of Indian youth in various meetings and discussion circles, because it is character that elevates animals to man and man to divinity. Many young friends sneer and make negative comments when they hear about character excellence. Only those who believe in a dogma denying history and who are raised from an early age in chaotic thinking see the negative side of character development. What is meant by character and its role in the formation of a country or a nation is also not presented in the current education system. As if passing the three types of exams has become the main objective for them today. We blame each other for not being able to stand the struggle of life. We are trying to build a palace on a newly filled pond. There is no way to survive, danger will come from both sides, if we are going to solve economic and social problems without building character, then we will have to build a palace on the land filled with that pond. That is, on the one hand, all our efforts will end in failure, on the other hand, our future heirs will suffer the consequences. We forget that the character of the nation depends on the character of the individual. A set of habits is called a character. An impression of what we do, what we think every moment is constantly being imprinted on our mind and from this condensed impression, samskara is created. Its sum is called character. Just as the dead artist builds a beautiful idol out of raw clay, so the living artist builds his own character or Sanskar. This character is developed through auspicious and benevolent actions and thoughts. And this is the only realistic method.
In the world, only confident people of character create history. The strong personality we get in their lives is based on their strong character. In history, we see how a nation's art, literature and culture influence the character of that nation. But character is not an overnight thing. Just as a picture gradually comes to life in the artist's hand, man also gradually develops his character through diligent effort and solitude. We observe the reflection of individual human civilization and culture in his society and state. Reviewing the life stories of people with history-making personalities, it will be seen that their lives are made up of wonderful sweetness of character. We see the development of breakthrough personalities in the characters of Buddha, Christ, Chaitanya and Sri Ramakrishna. They have acquired such character only by being established in truth. Swamiji called Buddha the greatest person in the world. Because He was completely selfless and He incarnated only for the welfare of people. Even if the world is completely depopulated, their characters will continue to resonate in the air. Many people in the world today, irrespective of the country, time and caste, try to build their own character in their way of thinking. Posthumous great men left their incomparable character to the nation; And it must not be forgotten that as personality depends on character, so character depends on honesty. Such a timeless revolutionary personality is developed only if one clings to the truth in body, mind and speech. They were all. Great revolutionary. Because they have spent the last drop of blood in their minds and thoughts against injustice and untruth.
Mahamandal emphasizes Swami Vivekananda's “character-building and humanity-seeking” teaching that there can never be a characterless personality. It is a universally accepted fact that character is the foundation of personality.