রামকৃষ্ণ পরমহংস দেবের ধর্মীয় সম্প্রীতি
শ্রীরামকৃষ্ণের জীবন ও বাণীর মধ্যে সকলকে সমাদরে গ্রহণের যে মনোভাব, সে সম্বন্ধে সাক্ষ্য রেখেছেন আরও একজন দর্শনশাস্ত্রের বিদগ্ধ অধ্যাপক ডঃ মহেন্দ্রলাল সরকার ঃ “শ্রীরামকৃষ্ণের অনুভূতিপ্রবণ সত্তা মানুষের জীবনের মূল বিশ্বাসগুলির মধ্যে এই পার্থক্যগুলি মেনে নিতে পারত না ; এবং সমাধান ব্যক্ত করার আগে তিনি ধর্মবিশ্বাসসমূহ নিজে অনুশীলন ও তন্ত্রব্ধ ফলের নিরিখে তাদের বিচার করতেন।"
এমন দিব্য সংহতিকারদের সম্পর্কে ই ডাবলু হপকিন্স তাঁর ‘অরিজিন এ্যাণ্ড ইভলিউসন অব্ রিলিজিয়স' গ্রন্থে বলেন, “এমন পুরুষ উত্তর- পুরুষদের হাতে তুলে দেন প্রাচীন ধর্মই, নিজেকে তার সঙ্গে সংযোজিত করে; আর এই সংযোজনটি প্রায়ই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হয়ে দেখা দেয়।"
তাই সতীশচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় বলেন, “প্রাচীন হিন্দুধর্মমতের উপদেশাবলীতে নব উদ্যম ও শক্তি সংযোজিত করে প্রচার করেন শ্রীরামকৃষ্ণ এবং তিনি বলেন 'যত মত তত পথ”। ”
স্বামী ঘনানন্দ তাঁর শ্রীরামকৃষ্ণ এ্যাণ্ড হিজ ইউনিক মেসেজ' নামক গ্রন্থে দেখিয়েছেন যে, সেই মহান শিক্ষক জীবনের সর্বস্তরে এবং মানুষের প্রচেষ্টা বা কর্মের সকল ক্ষেত্রে সমন্বয়ের তত্ত্বকে প্রয়োগ করেছেন। ধর্মসমন্বয় প্রসঙ্গে স্বামী ঘনানন্দ বলছেন : "হিন্দুধর্ম ছাড়াও ইসলাম, খ্রীষ্টীয় এবং অন্যান্য ধর্মের সত্যোপলব্ধির দ্বারা শ্রীরামকৃষ্ণ জগতের অধ্যাত্ম- রহসাবেত্তাদের মধ্যে এক অনন্যসাধারণ আসনের অধিকার লাভ করেছেন এবং জগতের কৃষ্টি ও অধ্যাত্মচিন্তা, মনুষ্যজাতির আশা-আকাঙ্ক্ষা ও আদর্শের ক্ষেত্রে এক সর্বাবগাহী সমন্বয়ের বার্তা প্রচারে সমর্থ হয়েছেন – শ্রীরামকৃষ্ণের এ এক অনুপম গৌরব। দৃঢ়মুষ্ঠিতে সত্যোপলব্ধির ফলটি প্রয়োগে তিনি তার রসটুকু নিংড়ে বের করতে পেরেছেন। সেটি হল একটি মহান তত্ত্ব "সর্বধর্মসমন্বয়।"ঐক্য এবং সমন্বয় তত্ত্বের ওপর এতটা গুরুত্ব আর কেউ আরোপ করেন নি, যেমনটা করেছিলেন স্বামী বিবেকানন্দ। এ বিষয়ে তাঁর ওজস্বী উক্তিটি শুনুন : "এইসকল উক্তিগুলি যখন প্রথম লিখিত হয়েছিল, তখনকার চাইতে আজ এগুলি আরো সজীব, মহান, উদ্দীপনাময় এবং প্রাণপ্রদ বাণীরূপে আমাদের কাছে এসে পৌঁছেছে : 'একং সদ্বিপ্রা বহুধা বদন্তি'। আমাদের এখনও একথা শেখার আছে যে, ধর্ম – তা সে হিন্দু, বৌদ্ধ, ইসলাম বা খ্রীষ্টীয় যে নামেই অভিহিত হোক না কেন, সকল ধর্মের ঈশ্বর একই এবং যিনি এগুলির মধ্যে কোন একটিকে উপহাস করেন, তিনি তাঁর নিজের ঈশ্বরকেই উপহাস করেন।”
“খ্রীষ্টের আবির্ভাবের তিনশো বছর পূর্বে বৌদ্ধ প্রচারকগণের প্রতি নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, অপর অপর ধর্মকে যেন নিন্দা না করা হয়। যে কোন দেশের ধর্মই হোক না কেন, সমস্ত ধর্মের মূল ভিত্তিটি এক এক যতটা পারো তাদের সাহায্য করতে চেষ্টা কর, যতটা পারো তাদের শিক্ষা দিতে চেষ্টা কর, কিন্তু কদাচ তাদের আঘাত করতে চেষ্টা কোর না।” “ঈশ্বরবিষয়ক গ্রন্থ কি নিঃশেষিত ? না, এখনো অবিরাম সেই রহস্যোপলব্ধি ও তার প্রকাশ চলেছে। বিশ্বের আধ্যাত্মিক রহস্যের প্রকাশমান গ্রন্থটি বিস্ময়কর। বাইবেল, বেদ, কোরান এবং অন্যান্য পবিত্র গ্রন্থরাজি এই মহাগ্রন্থের এক এক গুচ্ছ পৃষ্ঠা মাত্র ; আর কতই না সংখ্যাতীত পৃষ্ঠা এখনো অনুদ্ঘাটিত। আমরা বর্তমানে দাঁড়িয়ে আছি, কিন্তু উন্মুখ হয়ে চেয়ে আছি অনাগত ভবিষ্যতের দিকে। অতীতে যা কিছু ছিল, সব আমরা গ্রহণ করি বর্তমানের আলোককে আমরা বরণ করি ; অনাগত ভবিষ্যতের সবকিছুকে গ্রহণ করার জন্য হৃদয়ের সব বাতায়ন রাখি খুলে। অতীতের দেবমানবদের প্রণাম করি, এ যুগের সব মহাপুরুষকে প্রণাম করি, আর প্রণাম করি, অনাগত ভবিষ্যতের অগণিত মহামানবদের।”
এক আধুনিক বেগবান মন, যা বিচারশীল, বাস্তববুদ্ধি এবং বিজ্ঞান বোধসম্পন্ন অথচ পুরাতনকে শুধু পুরাতন বলেই ব্যঙ্গ করবার মত চটুল আধুনিকতার ধার ধারে না, যে মন মানবজীবনের অনন্ত সম্ভাবনায় বিশ্বাস ও দুর্নিবার আশা নিয়ে এগিয়ে যেতে কৃতসঙ্কল্প,সেই মনের ভাবনার ভঙ্গি এমনই হয়। যে আধ্যাত্মিক প্রেরণা শ্রীরামকৃষ্ণকে বিভিন্ন ধর্মমতের সাধনায় উদ্বুদ্ধ করেছিল, তা তাঁর প্রচারিত ধর্মসমন্বয়ের বার্তার মতই মহান। স্বামী প্রভবানন্দ বলছেন : “একবার শ্রীরামকৃষ্ণকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, তিনি কেন এতগুলি পথ ধরে সাধনা করলেন; সেই চরম লক্ষ্যে পৌঁছতে একটি পথ কি যথেষ্ট নয় ? তাঁর উত্তর ছিল – 'মা যে অনস্ত, সীমাহীন তাঁর ভাব ও বৈচিত্র্য। আমি সব পথেই তাঁকে উপলব্ধি করতে চেয়েছিলাম। তাই তিনি সকল ধর্মের সত্যই আমাকে দেখিয়ে দিয়েছিলেন। ফলে, যদিও বিভিন্ন ধর্মের সমন্বয়সাধনের উদ্দেশ্য নিয়ে তিনি এইসব ধর্মীয় পথ অনুসরণ করতে যাননি, তবু তাঁর জীবনে মূর্ত হয়ে উঠেছিল সেই সমন্বয়। "
বিশ্বজনীনতা ও সমন্বয় নতুন করে সৃষ্টি করার প্রয়োজন নেই; তারা আগে থেকেই রয়েছে। স্বামী বিবেকানন্দ দেখিয়েছেন : “বিশ্বজনীন ধর্ম সর্বদাই বিদ্যমান। পুরোহিতকুল এবং অন্য যাঁরা নিজেদের ঘাড়ে বিভিন্ন ধর্ম প্রচারের দায়িত্ব নিয়েছেন, শুধু তাঁরা যদি কয়েক মুহূর্তের জন্য ধর্মপ্রচার থেকে ক্ষান্ত থাকেন, তা হলেই আমরা তা দেখতে পাব। তাঁরা তাঁদের আপন স্বার্থের জন্যই আসল ধর্মকে সর্বদা বিকৃত করছেন। সেই পুরোহিতের ভাগ্যে কি হবে, যিনি তোমাকে নতুন ও উন্নত ভাবাদর্শে এগিয়ে যাবার পথ দেখাবেন ? অবশ্য কিছু অসাধারণ ব্যক্তি রয়েছেন, যাঁরা লোকের মতামতের জন্য ভীত নন। তাঁরা সত্যদ্রষ্টা এবং কেবল সত্যকেই মূল্য দেন।
এমনি এক মহাপ্রাণ ব্যক্তি ছিলেন শ্রীরামকৃষ্ণ, যিনি তাঁর আদরিণী শ্যামা মাকে তাঁর সর্বস্ব সমর্পণ করে নিজের করে ধরে রেখেছিলেন শুধু সত্যকে। এই সত্য তাঁর মর্মসন্ধানী দৃষ্টির নিকট নিজের বহুবিচিত্র রূপ উন্মোচন করেছিল আর সেই বৈচিত্র্যের সমন্বিত সত্যকে তিনি মানবজাতির কাছে উত্তরাধিকারস্বরূপ অর্পণ করেছেন।
আধুনিক জগতের কাছে শ্রীরামকৃষ্ণের পরিচয় দিয়ে প্রখ্যাত সাহিত্যিক ক্রিষ্টোফার ইশারউড লিখেছেন : “আসলে খাঁটি আস্তিক অথবা ঘোর নাস্তিকদের উদ্দেশ্যে এই বই আমি লিখছি না। যেখানেই হোক, কোন অত্যাশ্চর্য বস্তু দেখে তাকে অভাবনীয় বলে স্বীকার করতে যাঁরা কুণ্ঠিত হন না, আর যারা কোন নতুন আবির্ভাবের সন্ধানে সর্বদা উন্মুখ হয়ে রয়েছেন, সেই শ্রেণীর পাঠকদের জন্যেই আমার এই রচনা।”
কোন নতুন আবির্ভাবের পূর্ণ তাৎপর্য এবং ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা ঠিক ঠিক বুঝতে হলে চাই অন্তর্দৃষ্টির গভীরতা এবং দৃষ্টিভঙ্গীর প্রসারতা। যাঁদের মধ্যে এসবের অভাব, তাঁরাই আধুনিক জগতের অবতার পুরুষের জীবন ও বাণীকে ছোট করতে বা সমালোচনা করতে চেষ্টা করেন। ১৮৯৬ খ্রীষ্টাব্দে ম্যাক্স মূলার শ্রীরামকৃষ্ণের জীবন অবলম্বনে 'দি নাইনটিস্থ সেঞ্চুরী' পত্রিকায় 'এ রিয়েল মহাত্মা' শীর্ষক একটি প্রবন্ধ লেখেন। তাতে পাশ্চাত্ত্যবাসীদের মন থেকে এই মহান শিক্ষক সম্পর্কে কিছু ভিত্তিহীন সংশয় ও ভ্রান্ত ধারণা দূর করতে চেষ্টা করেছিলেন। সর্বদা মহৎ ব্যক্তিদের খাটো করে দেখাতে ব্যস্ত লোকেদের অভাব কখনই ছিল না। ১৯০৪ খ্রীষ্টাব্দে (স্বামী বিবেকানন্দের তিরোভাবের পর) গিরিশচন্দ্র ঘোষ (যাঁর পরিচয়ের কোন প্রয়োজন নেই) স্বামী বিবেকানন্দের জন্মতিথি উপলক্ষ্যে বেলুড় মঠে জনসমক্ষে বক্তৃতা দেওয়ার সময় মন্তব্য করেছিলেন :
“নিন্দুক এক আশ্চর্য সৃষ্টি । বোধ হয় সকল মহাকার্যেই তাহাদের প্রয়োজন। নিন্দুক সীতার বনবাস দিয়াছিল, প্রেমের বৃন্দাবনলীলায় জটিলা- কুটিলা ছিল, বিবেকানন্দের লীলায়ও নিন্দুকের অভাব নাই। ... নিন্দুক তাঁহার নিন্দা লইয়া থাকুন, তাঁহাদের জীবন কাহারও লক্ষ্য করিবার বা ঈর্ষা করিবার নহে।”
-------------------------------------------------------------------
-------------------------------------------------------------------
Religious Harmony Of Ramakrishna Paramhans Dev
How did disunity and conflict arise? Regarding the description of the state of the religious world before the appearance of Sri Ramakrishna, the eminent professor of philosophy Dr. Satishchandra Chattopadhyay wrote, “Different religious communities and groups had different ideas about God. Their religion was also different and full of dogmatism and they observed different customs and rituals in their religious life. Every religious group or sect thought that its own religion was the only true and liberating one and all other religions were wrong and like gates of eternal hell. This extreme religious bigotry and fanaticism characterized various groups and sects and polluted the religious climate of the age. It was during those turbulent days of religious strife and conflict that Sri Ramakrishna uttered his message of pantheism."
Dr. Mahendralal Sarkar, another learned professor of philosophy, has testified about the attitude of acceptance of all in the life and words of Sri Ramakrishna: “Sri Ramakrishna's emotional being could not accept these differences in the basic beliefs of human life; And before propounding the solution, he would judge the religions by their own practice and discernible results."
About such divine integrators, EW Hopkins in his book 'Origin and Evolution of Religions' says, “Such men handed over to post-men the ancient religion, annexing itself to it; And this addition often turns out to be the most important ingredient."
So Satishchandra Chattopadhyay says, "Sri Ramakrishna preached with new zeal and energy to the teachings of ancient Hinduism and he said 'Yat mot tai path'". "
Swami Ghanananda in his book 'Sri Ramakrishna and His Unique Message' has shown that the great teacher applied the principle of harmony to all walks of life and to all spheres of human endeavor or action. Swami Ghanananda says in the context of religious harmony: "By his realization of Islam, Christianity and other religions besides Hinduism, Sri Ramakrishna acquired a unique seat among the mystics of the world and was able to preach the message of an all-pervading harmony in world culture and spirituality, hopes and ideals of mankind - This is the unparalleled glory of Sri Ramakrishna. By applying the fruit of Satyopalabdhi with a firm fist, he has squeezed out its juice. That is the great theory of "Sarvadharmasamvaya."
No one laid as much emphasis on the theory of unity and harmony as Swami Vivekananda did. Hear his eloquent quote on this: "These sayings have come down to us today as more alive, grander, rousing and life-giving utterances than when they were first written: 'Ekang sadvipra bahudha badanti'. We have yet to learn that religion—that Be it Hindu, Buddhist, Islamic or Christian, the God of all religions is the same and whoever mocks any of them, mocks his own God.”
“Three hundred years before the advent of Christ, Buddhist preachers were instructed not to blaspheme other religions. No matter the religion of any country, the basic principle of all religions is try to help them as much as you can, try to teach them as much as you can, but never try to hurt them.” Is the book on God exhausted? No, the mystery and its revelation are still ongoing. The revelation of the spiritual mysteries of the world is wonderful. The Bible, the Vedas, the Koran and other sacred books are only a few pages of this great book; And how many unnumbered pages are still undiscovered. We stand in the present, but look forward to the future. We accept all that was in the past; we accept the light of the present; Open the heart to receive all that is yet to come. I bow down to the gods and men of the past, I bow down to all the great men of this age, and I bow down to the innumerable great men of the future.”
A modern fast-paced mind, which is judicious, practical and scientific, but not on the edge of modernity, so as to satirize the old as just old, a mind that is determined to move forward with faith in the infinite possibilities of human life and hope for failure, such is the attitude of that mind. The spiritual motivation that inspired Sri Ramakrishna to pursue different religious beliefs was as great as the message of religious harmony he preached. Swami Prabhavananda says: “Once Sri Ramakrishna was asked, why did he pursue sadhana along so many paths; A way to reach that ultimate goal is not enough? His answer was – 'Mother is restless, unlimited in her expressions and diversity. I wanted to realize Him in every way. So he showed me the truth of all religions. As a result, although he did not pursue these religious paths with the intention of harmonizing different religions, that harmony was embodied in his life. "
Universality and coordination need not be reinvented; They already exist. Swami Vivekananda pointed out: “Universal religion has always existed. If only the clergy and others who have taken upon themselves the responsibility of evangelizing for a few moments, we will see it. They are always perverting the original religion for their own interests. What will happen to the priest, who is new and improved to you Will you show the way to move forward in ideology? However, there are some extraordinary people who are not afraid of people's opinion. They are truth seers and value only truth.
Such a great person was Sri Ramakrishna, who surrendered all his possessions to his mistress Shyama Ma and retained only truth as his own. This truth revealed itself to his inquiring eye in its multifarious forms, and he bequeathed to mankind the unified truth of that diversity.
Introducing Sri Ramakrishna to the modern world, famous writer Christopher Isherwood wrote: “I am not writing this book for pure believers or ardent atheists. I write this work for that class of readers, who do not hesitate to recognize the inconceivable at any sight, and who are ever on the lookout for new revelations.”
A depth of insight and a breadth of vision are needed to fully grasp the full significance and future potential of any new phenomenon. Those who lack these, try to belittle or criticize the life and words of the Avatar Purusha of the modern world. In 1896, Max Muller wrote an article entitled 'A Real Mahatma' in 'The Nineteenth Century' based on the life of Sri Ramakrishna. He tried to remove some baseless doubts and misconceptions about this great teacher from the minds of Westerners. There was never a shortage of people busy belittling great men. In 1904 AD (after Swami Vivekananda's Tirovava) Girish Chandra Ghosh (who needs no identification) while delivering a public lecture at Belur Mutt on the occasion of Swami Vivekananda's birth anniversary remarked:
"The cynic is a wonderful creature. It seems that they are needed in all great works. Sita was banished by cynicism, Vrindavanlila of love had complications, Vivekananda's lila also had no lack of cynicism. .