Bharat Kalyan ( Part- 2A) ##Our MotherLand #Current Degradation


পর্ব - ২ক 
বর্তমান অধঃপতন
ইহার কারণ


দোষ আমাদের :

আমরা বেদান্তবাদী বলিয়া আমাদের দৃঢ় প্রত্যয় যে, আমরা স্বয়ং না করিলে বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে এমন কোন শক্তি নাই, যাহা আমাদের কোন অনিষ্ট করিতে পারে। অতএব আমাদের বর্তমান অবনতির জন্য দায়ী অপর কেহ নয়, দায়ী আমাদের কর্ম। যে সব ত্রুটি-বিচ্যুতির ফলে ভারতের বর্তমান দুর্গতি, তাহাদের মূলে আমরাই। সুতরাং অপরের স্কন্ধে না চাপাইয়া নিজের দোষ অম্লানবদনে আমাদের স্বীকার করিতে হইবে।

উপেক্ষিত অতীত :

আজকাল অনেকেই মনে করেন যে, অতীতের দিকে নিবন্ধদৃষ্টি ব্যক্তিরা মারাত্মক ভুল করিতেছেন। তাঁহাদের ধারণা, পুরাবৃত্তের প্রতি এই নিবিড় মমতাই ভারতের যাবতীয় দুর্গতির মূল কারণ। আমার কিন্তু মনে হয় ইহার ঠিক বিপরীত ধারণাটিই সত্য। হিন্দুজাতি যতদিন অতীত বিস্তৃত হইয়াছিল, ততদিন তাহারা যেন ছিল তন্দ্রাচ্ছন্ন। আর বর্তমানে যেই তাহাদের দৃষ্টি পুরাকালের দিকে প্রসারিত হইতে আরম্ভ করিয়াছে, অমনি দিকে দিকে একটা নবজীবনের সাড়া পড়িয়া গিয়াছে।

ভারতীয় ইতিহাসের গবেষকগণ প্রত্যেকেই জানেন যে, এদেশে সামাজিক বিধানগুলি কোনকালেই অনড় ছিল না; বরং হিন্দুসমাজের কাঠামোটি বরাবরই যুগোপযোগী পরিবর্তনসাপেক্ষ রহিয়াছে। এই বিধানগুলির মূলে আছে এক বিশাল পরিকল্পনা, যাহা কালের গতির সঙ্গে সঙ্গে ধীরে ধীরে বাস্তবে রূপায়িত হইতেছে ও হইবে। প্রাচীন ভারতের মহাপুরুষগণের ভবিষ্যৎ দৃষ্টি এত সুদূরপ্রসারী ছিল যে, তাহা হৃদয়ঙ্গম করিতে বর্তমান মানবসমাজকে এখনও বহুশতাব্দী অপেক্ষা করিতে হইবে। বস্তুতঃ এই অপূর্ব পরিকল্পনাটির পূর্ণ তাৎপর্য আর্যঋষিদের বর্তমান বংশধরগণও অনুধাবন করিতে পারে নাই এবং ইহাই তাহাদের বর্তমান অধোগতির প্রধান কারণ।

দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্কীর্ণতা :

ভারতের এই অবনতির অন্যতম কারণ আমাদের সঙ্কীর্ণ দৃষ্টি ও কর্মক্ষেত্রের সঙ্কোচন। আমরা দেশের বাইরে অন্যান্য জাতির সহিত নিজেদের ভাব ও কর্মধারা মিলাইয়া দেখি নাই, বহির্বিশ্বে কী ঘটিতেছে তাহার কোন খবর লই নাই। বিগত কয়েক শতাব্দী ধরিয়া ভারত শুক্তির মত নিজেকে সঙ্কীর্ণ গণ্ডীর মধ্যে সঙ্কুচিত করিয়া রাখিয়াছিল এবং তাহার গর্ভস্থিত অমূল্য রত্নভাণ্ডার, প্রাণপ্রদ সত্যসম্পদের ভাগ অপর কোন সত্যপিপাসু মানবগোষ্ঠীকে দেয় নাই। ইহাই ভারতবাসীর মানসিক

অধঃপতনের জন্য প্রধানতঃ দায়ী। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, কোন ব্যক্তি বা জাতি অপরের সহিত সম্পর্ক বর্জন করিয়া টিকিয়া থাকিতে পারে না। মহত্ত্ব, শুচিতা বা কর্মনীতির ভুয়া দোহাই দিয়া এরূপ অপচেষ্টা যে-কেহ করিতে গিয়াছে সেই শুচিবায়ুগ্রস্ত ব্যক্তি বা জাতিকে অনতিকাল পরে অপরিহার্য সঙ্কটের সম্মুখীন হইতে হইয়াছে।

তাই বিধর্মীর প্রতি বিজাতীয় ঘৃণাকে ভিত্তি করিয়া হিন্দুসমাজের চতুর্দিকে লোকাচারের যে অলঙ্ঘ্য প্রাচীরটি গড়া হইয়াছিল, উহাই ভারতের বর্তমান অবনতির অন্যতম মূল কারণ বলিয়া আমি মনে করি। পুরাকালে চারিপাশের বৌদ্ধ জাতির সংস্পর্শ হইতে হিন্দুসমাজকে বাঁচাইবার জন্যই এরূপ করিতে হইয়াছিল। প্রাচীন এবং বর্তমান পণ্ডিতগণ এই ঘটনাকে যতই যুক্তিজাল দ্বারা সমর্থন করিতে চেষ্টা করুন না কেন—অপরকে ঘৃণা করিলে নিজেরই অবনতি হয়, এই সনাতন নৈতিক বিধানটি কিন্তু তাহার অবশ্যম্ভাবী ফল প্রসব করিয়াছে। একদা প্রাচীন জাতিপুঞ্জের পুরোধা আজ বিশ্বসভায় নামমাত্র-সম্বল উপেক্ষিত এক জাতি। আমাদেরই পূর্বপুরুষগণ যে সনাতন নৈতিক বিধানটি প্রথম আবিষ্কার ও প্রচার করিয়াছিলেন, তাহার যাথার্থ্য প্রমাণ করিবার প্রকৃষ্ট উদাহরণ আজ আমরাই।

ধর্মের বিকার :

যে দেশের সমাজ-নায়কেরা গত দুই হাজার বৎসর ধরিয়া ডান হাত দিয়া আহার করা উচিত কি বাম হাত দিয়া, ডান পাশ হইতে জল লইব অথবা বাম পাশ হইতে, শুধু এই লইয়া বাদানুবাদ করিয়া আসিতেছেন, সে দেশ যদি অধঃপাতে না যায় তো কে যাইবে বল? বিগত ছয়-সাত শতাব্দী যাবৎ ভারতের অবনতির কথা একবার ভাবিয়া দেখ দেখি— শত শত বয়ঃপ্রাপ্ত ব্যক্তি বৎসরের পর বৎসর বিচার করিয়া আসিয়াছে, জলের গ্লাসটি ডান হাতে ধরিয়া পান করিব না বাম হাতে, হাত তিনবার ধোওয়া উচিত কি চারবার, কুলকুচা পাঁচবার করণীয় না ছয়বার। যাহারা এই প্রকার উদ্ভট প্রশ্নের মীমাংসা লইয়া এবং এই সম্বন্ধে অগাধ পাণ্ডিত্যপূর্ণ দার্শনিক গ্রন্থ লিখিয়া সারা জীবন কাটাইয়া দিয়াছে, তাহাদের নিকট আর বেশী কি আশা করা যাইতে পারে ?

বাস্তবিকই আশঙ্কা হয়, বুঝিবা আজ আমাদের ধর্ম রন্ধনশালাতেই অবরুদ্ধ হইয়া পড়িয়াছে। আসলে আমরা প্রায় সকলেই আজকাল বৈদান্তিক ও নই, পৌরাণিক বা তান্ত্রিকও নই—আমরা “টুংপন্থী”। আমাদের ধর্ম রান্নাঘরে গণ্ডীবদ্ধ। ভাতের হাঁড়ি আমাদের উপাস্য দেবতা, আর মগ্ন— “আমাকে চুই না, আমি শুচি।” এইরূপ ব্যাপার আর একশত বৎসর চলিলে সমগ্র হিন্দু সমাজ উন্মাদ-আশ্রমে পরিণত হইবে। জীবনের গুরুতর সমস্যাগুলি ধারণা করার অসামর্থ্যই মস্তিষ্ক-দৌর্বল্যের নিশ্চিত লক্ষণ; এই অবস্থায় মৌলিক গবেষণায় অক্ষম মানুষের অলস নিস্তেজ মন চিন্তাশক্তি হারাইয়া এক সঙ্কীর্ণ গভীর মধ্যে ঘুরিতে থাকে।

 গণদেবতার অনাদর:

আমার ধারণা, জনসাধারণের কল্যাণচিন্তা উপেক্ষা করিয়া আমাদের জাতি মহাপাতক করিয়াছে এবং তাহারই ফলে বর্তমান অধঃপতন। যতদিন না ভারতের অনভিজাত জনসমাজ সমাদৃত হইতেছে, যতদিন না তাহাদের জন্য উপযুক্ত খাদ্য, শিক্ষা প্রভৃতির ব্যবস্থা হইতেছে, ততদিন আমাদের যাবতীয় রাজনৈতিক ক্রিয়াকলাপ নিষ্ফল হইবে, এদেশের উন্নতি সম্ভব হইবে না। ভাবিয়া দেখ, এই দুর্গতদের পরিশ্রমই আমাদের শিক্ষার খরচ যোগায়, আমাদের মন্দির গড়িয়া তোলে, কিন্তু প্রতিদানে তাহারা আমাদের কাছে পায় শুধু পদাঘাত। বস্তুতঃ তাহারা আমাদের ক্রীতদাস। সত্যই যদি ভারতের নবজীবন আনিতে হয়, তবে এই উপেক্ষিত জনগণের শ্রীবৃদ্ধির জন্য চাই আমাদের ঐকান্তিক সাধনা।

শক্তির অমর্যাদা :

প্রাচীন স্মৃতিকার মনু বলিয়াছেন, “নারীর সম্মানে দেবতারা তৃপ্ত হন।” অথচ আমাদের চিন্তাধারা এত কলুষিত যে, আমরা স্ত্রীজাতিকে বলি—ঘৃণা কীট, নরকের দ্বার ইত্যাদি। এইজন্যই আমাদের অধঃপতন। শ্রীভগবান বেদমুখে বলিতেছেন, “তুমি স্ত্রী, তুমি পুরুষ, তুমি বালক, তুমি বালিকা।” আর আমরা উচ্চৈঃস্বরে প্রশ্ন করি—“মোহিনী নারীকে কে সৃষ্টি করিল।”

বেদান্ত ঘোষণা করিতেছেন—সকল জীবে একই চেতন আত্মা বিরাজমান। অথচ এই দেশে পুরুষ ও নারীর মধ্যে এত পার্থক্য করা হয় কেন, বুঝা খুব কঠিন। স্ত্রীজাতির সমালোচনা করা তোমাদের মজ্জাগত অভ্যাস, কিন্তু জিজ্ঞাসা করি, তাহাদের উন্নয়নের জন্য তোমরা কী করিয়াছ? স্মৃতি প্রভৃতি রচনা করিয়া কঠিন বিধিনিষেধে তাহাদিগকে আষ্টেপৃষ্ঠে এমন বাঁধিয়াছ যে, তাহারা সন্তান প্রসবের যন্ত্রমাত্রে পর্যবসিত হইয়াছে। কিন্তু জগজ্জননী আদ্যাশক্তির সাক্ষাৎ প্রতিমূর্তি নারীগণের অবস্থার উন্নতি সাধন না করিলে ভাবিও না যে তোমাদের অগ্রগতির অন্য কোন উপায় আছে।

-------------------------------------------------------------------

Part- 2A
Current degradation

This is the reason

Our Faults:

Being Vedantists, we firmly believe that there is no power in the universe that can do us any harm unless we do it ourselves. Therefore our present deterioration is not responsible for anyone else but our actions. We are at the root of all the mistakes that have led to India's present woes. So we have to accept our own faults without pressing others.

Neglected Past:

Many people today think that people who look to the past are making a grave mistake. According to them, this deep affection for the ancients is the root cause of all the ills of India. But I think the opposite is true. As long as the Hindu race was expanding in the past, it was as if they were drowsy. And now, as their vision begins to expand towards the past, a new life is gradually falling.

Every scholar of Indian history knows that social orders have never been rigid in this country; Rather, the structure of Hindu society has always been subject to change. At the root of these provisions is a grand plan, which is and will be gradually materialized with the passage of time. The future vision of the great men of ancient India was so far-reaching that the present human society will have to wait for centuries to realize it. In fact, the full significance of this wonderful plan has not been realized even by the present descendants of the Arya rishis and this is the main reason for their present decline.

Narrowness of vision:

One of the reasons for this decline in India is our narrow vision and shrinking of the workplace. We have not reconciled our thoughts and actions with other nations outside the country, we have not taken any news of what is happening in the outside world. For the past few centuries, India has confined itself like a shukti within its narrow confines and has not given its share of the priceless jewels, the life-giving wealth of truth, to any other truth-thirsty human race. This is the mindset of Indians

Mainly responsible for degradation. It is my firm belief that no individual or nation can survive without relation to others. Whoever has made such an attempt under the false pretext of greatness, purity or work ethic, the clean-aired person or nation has had to face an inevitable crisis after a long time.

Therefore, I think that the impenetrable wall of morality built around the Hindu society based on the foreign hatred towards the heathen is one of the main reasons for the current deterioration of India. In ancient times, this was done to save the Hindu society from contact with the surrounding Buddhist nations. No matter how many scholars, ancient and modern, try to justify this fact with a chain of logic—hatred of others leads to self-degradation, this ancient moral maxim has its inevitable consequences. Once the patriarch of an ancient nation is today a nominally-neglected nation in the world assembly. Today we are the best example to prove the correctness of the traditional moral system that our forefathers first discovered and propagated.

Disorders of religion:

For the last two thousand years, the social heroes of the country have been arguing whether they should eat with their right hand, should they drink water from the right hand or from the left hand, if that country does not go down, who will? Think about the decline of India for the past six or seven centuries - hundreds of adults have judged year after year whether to hold a glass of water with the right hand or drink with the left hand, whether one should wash one's hands three times or four times, one should do kulkucha five times or six times. What more can be expected from those who have spent their whole lives solving such strange questions and writing highly erudite philosophical books about it?

It is really feared that today our religion is blocked in the kitchen. In fact, almost all of us today are neither Vedantic, nor Puranic, nor Tantric—we are "extremists". Our religion is rooted in the kitchen. The rice-pot is our deity, and engrossed—"Don't kiss me, I'm clean." If things like this continue for another hundred years, the entire Hindu society will turn into a madhouse. An inability to conceive the serious problems of life is a sure sign of brain-weakness; In this condition, the lazy dull mind of people incapable of basic research wanders in a narrow abyss, losing the power of thinking.

 Desecration of Mass Gods:

In my opinion, disregarding the welfare of the people has made our nation great and hence the present decadence. As long as the non-elite people of India are not respected, until they are provided with proper food, education, etc., all our political activities will be fruitless, the development of this country will not be possible. Think about it, the labor of these unfortunates pays for our education, builds our temple, but in return they get only a kick from us. In fact, they are our slaves. If India is to be truly rejuvenated, we must strive for the upliftment of this neglected people.

Indignity of Power:

The ancient memoirist Manu said, "The gods are pleased with the honor of women." But our way of thinking is so corrupt that we call women - abominable insects, gates of hell etc. Hence our degradation. Sri Bhagavan says to Vedamukh, "You are woman, you are man, you are boy, you are girl." And we ask aloud the question - "Who created the charming woman?"

RJKB

RJKB stands for Raja Jnana Karma Bhakti. In this blogger site, you will get many more life building thoughts which will increase your Spiritual Power. So join this blog & start your Spiritual Journey. আর জে কে বি মানে রাজ জ্ঞান কর্ম ভক্তি। এই ব্লগার সাইটে, আপনি আরও অনেক জীবন গঠনের চিন্তা পাবেন যা আপনার আধ্যাত্মিক শক্তি বৃদ্ধি করবে। সুতরাং এই ব্লগে যোগ দিন এবং আপনার আধ্যাত্মিক যাত্রা শুরু করুন।

Post a Comment

Previous Post Next Post