পর্ব - ২খ
বর্তমান অধঃপতন
ইহার কারণ ও লক্ষণ
সাংস্কৃতিক বৈজাত্য ও গোঁড়ামি:
ভারতে বহুবিধ বিপদ দেখিতে পাইতেছি। ইহাদের মধ্যে দুইটি — নিছক জড়বাদ ও উহারই ঠিক বিপরীত ঘোর কুসংস্কার— বিশেষভাবে বর্জনীয়। আজকাল একশ্রেণীর ভারতবাসী আছে, যাহারা পাশ্চাত্য শিক্ষা-দীক্ষার মদিরা আকণ্ঠ পান করিয়া নিজেদের সর্বজ্ঞ মনে করে। ইহারা প্রাচীন মহাপুরুষদের হাসিয়া উড়াইয়া দেয়, সমগ্র হিন্দু ভাব ও আদর্শকে একান্ত নিঃসার বলিয়া মনে করে। ইহাদের ধারণায় হিন্দুদর্শন শুধুই শিশুর অর্থহীন বুলি, আর হিন্দুধর্ম অজ্ঞের কুসংস্কার মাত্র।
কিন্তু পরানুকরণ সভ্যতা নয়। রাজপরিচ্ছদ পরিলেই কি আমি রাজা বনিয়া যাইব? সিংহচর্মের আচ্ছাদনে গর্দভ কখনও সিংহতু লাভ করে না। বস্তুতঃ অন্ধ অনুকরণ কখনও প্রগতির পন্থা হইতে পারে না; বরং ইহা মানুষের ভয়াবহ অধঃপতনের নিশ্চিত লক্ষণ। বাস্তবিক কেহ নিজেকে ঘৃণা করিতে আরম্ভ করিলেই বুঝিতে হইবে যে, তাহার ব্যক্তিত্বের উপর চরন আঘাত পড়িয়াছে। তারপর পূর্বপুরুষদের প্রসঙ্গে লজ্জাবোধের সূচনা হইলে বুঝিতে হইবে, তাহার আত্মবিলুপ্তির অন্তিমকাল উপস্থিত।
অপর দিকে শিক্ষিত ভারতবাসীদের মধ্যে আর এক শ্রেণীর লোক আছে, যাহারা কতকটা বাতুলের মত একেবারে বিপরীত সীমান্তে দাঁড়াইয়া হাঁচি, টিকটিকি প্রভৃতি বাধার সারগর্ভত্ব প্রমাণ করিতে ব্যস্ত। তাহারা মনে করে যে, তাহাদের জাতিটি অনন্যসাধারণ, প্রত্যেকের অভীষ্ট দেবতাটি অতুলনীয় এবং নিজের গ্রামটি নিরুপম। এই জাতীয় ভ্রান্ত ধারণার সার্থকতা প্রতিপন্ন করার জন্য তাহাদের কাছে কি দার্শনিক, কি অলৌকিক, কি অপর কোন অদ্ভুত বালসুলভ যুক্তিজালের কোনদিনই অভাব হয় না। পল্লীগ্রামের তুচ্ছতম কুসংস্কারটিও যেন তাহাদের কাছে বেদের নির্দেশ; আর উহা মানিয়া চলার উপরই যেন এই জাতির আয়ু নির্ভর করে। এইরূপ মনোবৃত্তি হইতে হুঁশিয়ার। একথা সত্য যে, আমাদের বহু কুসংস্কার আছে। এই অন্ধ কুসংস্কারগুলি হিন্দুসমাজের কলঙ্ক, দূষিত ক্ষতেরই মত সমাজদেহে ইহাদের কদর্য অবস্থিতি।। এইগুলিকে কাটিয়া বাদ দিতে হইবে। অবশ্য এই প্রক্রিয়াতে আমাদের জাতির প্রাণ-শক্তি ধর্ম, আমাদের আধ্যাত্মিকতা নষ্ট হইবে না। আসলে ধর্মের মূল তত্ত্বগুলি এখনও অক্ষতই রহিয়াছে, এবং যতই জাতি-দেহের ঐ অবস্থিত কলঙ্ক-কালিমা বিদুরিত হইবে, ততই এই তত্ত্বগুলি আরও ভাস্কর হইয়া উঠিবে।
দৈহিক দুর্বলতা :
আমাদের উপনিষদের মহিমা সত্ত্বেও, ঋষিকুলোদ্ভব বলিয়া আমাদের বংশগৌরব সত্ত্বেও একথা অবশ্যই স্বীকার্য যে, অন্যান্য জাতির তুলনায় আমর দুর্বল, খুবই ক্ষীণজীবী। প্রথমেই আমাদের দৈহিক দুর্বলতা; ইহাই আমাদের দুর্দশার জন্য অনেকাংশে দায়ী।
দেশের যুবকগণকে সর্বাগ্রে বীর্যবান্ হইতে হইবে। ধর্মের কথা পরে। তোমরা বলবান হও, ইহাই তরুণ ভাইদের প্রতি আমার উপদেশ। তোমাদের বয়সে গীতাপাঠ অপেক্ষা ফুটবল খেলিলেই তোমরা স্বর্গের বেশী কাছ পৌঁছিতে পারিবে। দেহের পেশীগুলি আর একটু শক্ত হইলে তোমরা গীতা আরও ভাল বুঝিতে পারিবে। তোমাদের রক্ত আরও একটু ভাজা হইলে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের মহতী প্রতিভা এবং বিপুল বীর্য সম্বন্ধে তোমাদের ধা আরও পরিষ্কার হইবে। বলবান শরীরে যখন তোমরা মানুষের মত যজু ও দৃঢ়ভাবে দাঁড়াইতে পারিবে, তখন উপনিষদ এবং আত্মার মহিমা আর সুষ্ঠুভাবে বুঝিতে পারিবে। তাই যুবকদের গঠনের জন্য চাই লৌহসদৃশ দেশী ও ইস্পাতসদৃশ স্নায়ুর অভ্যন্তরে বজ্রকঠিন মন। চাই বীর্য, মনুষত্ব- বীর্যের সহিত ব্রহ্মতেজ।
আত্মবিশ্বাসের অভাব:
আমরা আত্মবিশ্বাস হারাইয়াছি। বস্তুতঃ, যে-কোনও ইংরেজ পুরুষ বা নারীর যে আত্মপ্রত্যয় আছে তাহার হাজার ভাগের একভাগও আমাদের নাই। একবার ভাবিয়া দেখ, আমরা তেত্রিশ কোটি ভারতবাসী এক হাজার বৎসর যাবৎ পরাধীন হইয়া আছি; আমাদের পদদলিত করিতে যে-কোনও মুষ্টিমেয় বিদেশী শত্রু আসিয়াছে, তাহারই কাছে ঘটিয়াছে আমাদের অনিবার্য পরাভব। ইহার কারণ – তাহাদের আত্মবিশ্বাস ছিল, আমাদের ছিল না। আত্মপ্রত্যয়, অর্থাৎ শ্রদ্ধা, ভারতবাসীর অন্তরে উদ্বুদ্ধ হওয়া একান্ত প্রয়োজন ।
পরাধীনতার ফলে মোহগ্রস্ত আমরা ভ্রান্ত বিশ্বাস পোষণ করিতেছি যে, আমরা দুর্বল, আমাদের কোন বিষয়ে স্বাতন্ত্র্য নাই। এরূপ মানসিক অবস্থায় শ্রদ্ধা লোপ পাইবেই। আমাদের হৃদয়ে প্রকৃত শ্রদ্ধার ভাবটি আবার প্রবুদ্ধ করিতে হইবে, আত্মপ্রত্যয় পুনরুজ্জীবিত করিতে হইবে। কারণ, তখনই দেশের যাবতীয় সমস্যার সমাধান আমরা নিজেরাই করিতে সক্ষম হইব।
সুতরাং, আত্মশক্তিতে বিশ্বাসী হও, আর সেই বিশ্বাসের বলে অমিত বিক্রমে উঠিয়া দাঁড়াও। ইহাই এখন প্রয়োজন। "আমরা নিত্য-শুদ্ধ-মুক্ত আত্মা। আমাদের পক্ষে কোন অপকর্ম করা একেবারেই অসম্ভব।" — চাই এইরূপ বিশ্বাস। এই বিশ্বাসের বলেই তোমাদের মনুষ্যত্ব, এমন কি দেবত্ব, প্রকটিত হইবে। বিশ্বাস কর, তোমরা প্রত্যেকেই বড় বড় কাজ করিবার জন্য জন্মিয়াছ। তোমাদের প্রত্যেককে বিশ্বাস করিতে হইবে যে, আদর্শ বিশ্ব-সভ্যতা গড়িবার জন্য জগতে অপর সকলেই নিজ নিজ কর্তব্য সম্পন্ন করিয়াছে, শুধু তোমার করণীয় অংশটুকুই অবশিষ্ট আছে। ঠিক এইভাবেই শুরু কর্তব্যের দায়িত্ব সম্বন্ধে সকল ভারতবাসীকে সচেতন হইতে হইবে।
গাম্ভীর্যের একান্ত অভাব—শুরু বা লঘু যে-কোনও বিষয় হাসিয়া উড়াইয়া দিবার এক হালকা পরিহাস-চপল প্রবৃত্তি—আমাদের সমাজে অলক্ষিতে একটা উৎকট মানসিক ব্যাধি হইয়া দাঁড়াইতেছে। এই ব্যাধিটি নির্মূল করিতে হইবে। আত্মশক্তিতে শ্রদ্ধাবান হইয়া বীরের মত উঠিয়া দাঁড়াও—তাহা হইলে দেশের কল্যাণে যাহা কিছু কাম্য অবশ্যই আসিবে।
স্বাবলম্বনের অভাব:
বর্তমানে শিশুর মত একটি অসহায় পরপ্রত্যাশী ভাব যেন আমাদের গোটা জাতীয় চরিত্রকে অধিকার করিয়া বসিয়াছে। মুখের কাছে তুলিয়া ধরিলে সকলেই খাদ্য উপভোগ করিতে প্রস্তুত। কেহ কেহ তাহাতেও খুশী নয়, গলনালীর ভিতর দিয়া উহা অপর কেহ গলাইয়া দিলে তাহারা তৃপ্ত হয়। কিন্তু স্বাবলম্বী না হইতে পারিলে কেহই বাঁচিয়া থাকার যোগ্য হয় না। সর্বদা মনে রাখিও, প্রত্যেক জাতিকেই আত্মরক্ষার বিষয়ে স্বাবলম্বী হইতে হইবে; ব্যক্তির ক্ষেত্রেও তাহাই। অপরের সাহায্যের প্রত্যাশা করিও না। বৈদেশিক সহায়তার উপর কখনও নির্ভর করিও না। ইহাই যথার্থ দেশাত্মবোধ। কোন জাতি যদি ইহা করিতে অপারগ হয়, বুঝিতে হইবে তাহার রাষ্ট্রীয় স্বাধীনতার এখনও দেরী আছে। অপেক্ষা করা ছাড়া তাহার উপায়ন্তর নাই।
আজ্ঞানুবর্তিতার অভাব :
সকলেই চায় হুকুম করিতে, আদেশ মানিতে কেহই প্রস্তুত নয়। প্রাচীনকালে সেই যে আশ্চর্য ব্রহ্মচর্য প্রথা ছিল, উহার অভাবেই আজ এই পরিণাম। আদেশ পালনে অভ্যস্ত হইলে আদেশ করিবার যোগ্যতা আপনিই আসিবে। প্রথমে সেবক হইতে শিখিল তবেই পরে প্রভু হইতে পারিবে। গুরুজন যদি তোমায় নদীতে ঝাঁপ দিয়া কুমীর ধরিতে বলেন, সর্বাগ্রে তাঁহার আজ্ঞা পালন করিও, যুক্তিতর্ক করিবে পরে। এমন কি, কোন আদেশ অন্যায় হইলেও প্রথমে উহা পালন করিয়া পরে প্রতিবাদ করিও।
নিজ ধর্মবিশ্বাস অক্ষত রাখিয়া অপর সব বিষয়ে আজ্ঞানুবর্তিতা
অনুশীলন কর। ভক্তিভাজনগণের নিকট সশ্রদ্ধ বশ্যতা ভিন্ন বিচ্ছিন্ন। ব্যষ্টিশক্তিগুলির সংহতি হয় না; ফলে কোন বড় কাজ সম্পন্ন করা যায় না।
তমসিকতা :
আমরা বাক্যবাগীশ; শুধু কথার ফুলঝুরি। আমাদের বাঁধা বুলি—“আমরা বড়, আমরা মহৎ।” বাজে কথা! আসলে আমরা হীনবীর্য। ইহাই আমাদের স্বরূপ। অনেক বিষয়ে তোতাপাখীর মত আমরা কতকগুলি বচন আওড়াই বটে, কিন্তু তাহার কোনটাই কাজে পরিণত করিতে পারি না। লম্বা লম্বা কথা বলা অথচ কাজে কিছু না করাটাই আমাদের স্বভাব হইয়া গিয়াছে। আমরা কপালের কোন্ দিকে তিলক কাটিব, ইহা লইয়া শত শত বৎসর পরস্পরের সহিত বিবাদ করিয়া আসিতেছি। মানুষের দৃষ্টিদোষে আমাদের খাদ্য অশুচি হয় কিনা, এইসব উদ্ভট বিষয়ে ঝুড়ি ঝুড়ি শাস্ত্র রচনা করিয়া আসিতেছি।
বস্তুতঃ, আমরা অলস, কর্মবিমুখ, সংহতিসাধনে অক্ষম, ভ্রাতৃপ্রেম-বর্জিত স্বার্থান্ধ মানুষ। পরস্পরকে ঘৃণা বা হিংসা না করিয়া আমরা এমন কি, তিনটি ব্যক্তিও একজোট হইতে পারিনা। বিশৃঙ্খল, অসংহত, অতীব স্বার্থপর এক বিশাল জনতা—ইহাই আমাদের বর্তমান শোচনীয় অবস্থার স্বরূপ। এইরূপ কর্মশক্তি লোপ পাওয়া আমাদের দুর্বল মস্তিষ্কের লক্ষণ। তাই আজ মগজে বলসঞ্চার করা একান্ত প্রয়োজন।
সংগঠন-ক্ষমতার অভাব :
সংগঠন-ক্ষমতা আমাদের ধাতে একেবারেই নাই। কিন্তু উহা আমাদের জাতীয় জীবনে অনুপ্রবিষ্ট করাইতেই হইবে। ঈর্ষাত্যাগই এই ক্ষমতালাভের প্রধান কৌশল। সহকর্মী ভাইদের মতামত গ্রহণ করিতে সর্বদা প্রস্তুত থাকিবে, সকল সময়েই তাহাদের সঙ্গে আপসে মীমাংসা করার সাধ্যমত চেষ্টা করিবে। সংগঠন-শক্তির উৎস কোথায়? আচ্ছা, চার কোটি ইংরেজ কি করিয়া এদেশে ত্রিশ কোটি লোককে শাসন করিতেছে? কিরূপে তাহারা এত শক্তিমান হইল? ইহার মনস্তাত্ত্বিক কারণটি কী? এই চার কোটি ইংরেজ তাহাদের ব্যক্তিগত ইচ্ছা সংহত করিয়া এক প্রচণ্ড শক্তি সৃষ্টি করিয়াছে; আর তোমরা ত্রিশ কোটি প্রত্যেকে নিজ নিজ স্বতন্ত্র বিচ্ছিন্ন ক্ষুদ্র ইচ্ছাশক্তিটুকু লইয়া রহিয়াছ। সুতরাং ভারতের গৌরবোজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গড়িয়া তুলিবার একমাত্র কৌশল—সংহতি, শক্তিসঞ্চয়, উদ্দেশ্যের একতানতা। অথর্ববেদসংহিতার একটি চমৎকার শ্লোক মনে পড়িতেছে : "তোমাদের হৃদয় এক হউক, তোমাদের সঙ্কল্প এক হউক; পুরাকালে দেবতারা একপ্রাণ হইয়াছিলেন বলিয়াই যজ্ঞের আহুতি গ্রহণ করিতে পারিয়াছিলেন। দেবতারা যে মানুষের পূজা পাইয়া থাকেন তাহার কারণ এই যে, তাহারা সংহত।" একচিত্ততাই জাতীয় শক্তির মূল। প্রাণিজ এবং আর্য ব্রাহ্মণ ও অব্রাহ্মণ—এই ধরনের তুচ্ছ বিষয় লইয়া যতই তোমরা ঝগড়া ও মারামারি করিতে থাকিবে, ততই ভবিষ্যৎ ভারত গঠন করিবার উপযোগী শক্তি-সংগ্রহ পিছাইয়া পড়িবে। মনে রাখিও, জাতির বহুধা বিক্ষিপ্ত সমগ্র ইচ্ছাশক্তি কেন্দ্রীভূত করিতে হইবে, এবং ইহারই উপর সম্পূর্ণ নির্ভর করিতেছে তোমাদের গৌরবোজ্জ্বল ভবিষ্যৎ।
ব্যবসাতে সততার অভাব :
ব্যবসা-সংক্রান্ত ব্যাপারে হিন্দুদের কেমন একটা শৃঙ্খলাহীন অপরিচ্ছন্নতা দেখা যায়। যথাবিধি প্রণালীতে নিখুঁত হিসাব রাখার যথেষ্ট অভ্যাস যেন তাহাদের ধাতে নাই। বাণিজ্যের মূল নীতিগুলি আমরা এখনও আয়ত্ত করিতে পারি নাই। এই জন্যই এদেশে যৌথ কারবারের প্রচেষ্টা প্রায়ই নিষ্ফল হইতে দেখা যায়। ব্যবসা মূলতঃ ব্যবসাই – উহার মধ্যে সৌহার্দ্য বা চক্ষুলজ্জার স্থান নাই। নিজেদের তত্ত্বাবধানে যে সকল দ্রব্য থাকিবে তাহাদের নিখুঁত হিসাব রাখা প্রয়োজন। না খাইয়াও যদি মরিতে হয়, তবুও এক তহবিলের টাকা ভাঙ্গিয়া অপর কাজে খরচ করা উচিৎ নয়। ইহাই ব্যবসার ক্ষেত্রে সততা-নিষ্ঠা। ইহার সঙ্গে চাই অকুণ্ঠিত কর্মতৎপরতা। পূজাজ্ঞানে প্রত্যেকটি কাজ সশ্রদ্ধ ঐকান্তিকতায় সম্পন্ন করা উচিত।
মানব-প্রীতির অভাব:
কোন ব্যক্তি বা জাতি অপরকে ঘৃণা করিয়া বাঁচিয়া থাকিতে পারে না। দেখ না—ভারতের ভাগ্য-বিপর্যয় শুরু হইল সেইদিন, যেদিন ভারতবাসী 'ম্লেচ্ছ' শব্দটি সৃষ্টি করিয়া বিদেশীদের অপাংক্তেয় করিতে শিখিল। বস্তুত ভালবাসা কখনও ব্যর্থ হইতে পারে না। আজ হউক বা কাল বা শতবর্ষ পরেই হউক, সত্যের জয়, প্রেমের জয় হইবেই। এখন ভাবিয়া দেখ, তোমরা কি মানুষকে ভালবাস?
-------------------------------------------------------------------
Part-2B
Current Degradation
Its Symptoms & Remedies
Cultural heterogeneity and bigotry:
I see many dangers in India. Two of these— mere materialism and its exact opposite, superstition — are particularly repulsive. There is a class of Indians these days who think themselves omniscient after drinking the wine of western learning. They make a mockery of the great men of old, and consider the whole Hindu thought and ideal to be utterly destitute. In their opinion, Hinduism is just a child's meaningless bully, and Hinduism is just the superstition of the ignorant.
But imitation is not civilization. Will I become a king if I wear a royal robe? Donkeys never become lions covered with lion skins. In fact, blind imitation can never be the path to progress; Rather, it is a sure sign of the terrible degradation of man. In fact, when someone begins to hate himself, he must understand that his personality has been trampled. Then, when the sense of shame begins in relation to the ancestors, it must be understood that the final period of its self-annihilation is present.
On the other hand, there is another class of people among the educated Indians, who stand on the opposite border like a few batuls and are busy proving the validity of obstacles like sneezes, lizards, etc. They think that their caste is unique, their god is incomparable and their village is infallible. They are never short of philosophical, paranormal, or other strange childish reasonings to justify such misconceptions. Even the slightest superstition of Palligram is like the instruction of the Vedas to them; And the life of this nation depends on its compliance. Beware of such mentality. It is true that we have many superstitions. These blind superstitions are like the stain of the Hindu society, its ugly place in the body of the society. These should be cut out. Of course, in this process, the life force of our nation, religion, our spirituality will not be lost. In fact, the basic tenets of religion still remain intact, and as the stigma of the nation-body is removed, these tenets will become more and more sculptural.
Physical weakness:
In spite of the glories of our Upanishads, in spite of our lineage as sages, it must be admitted that we are weak, very puny compared to other nations. First is our physical weakness; This is largely responsible for our plight.
The youth of the country should be the first to become virile. After talking about religion. Be strong, this is my advice to young brothers. At your age, you can reach closer to heaven by playing football than reading Gita. If the muscles of the body become a little stronger, you will be able to understand the Gita better. If your blood is fried a little more, you will have a clearer idea of Lord Krishna's great talent and great semen. When you can stand upright and firm like a man in a strong body, you will understand the Upanishads and the glory of the soul properly. So we want iron-like natives and steel-like nerves to build up the youth. I want semen, humanity - brahmat with semen.
Lack of confidence:
We have lost confidence. In fact, we have not one thousandth part of the self-confidence that any English man or woman possesses. Think once, we thirty-three million Indians have been subjugated for a thousand years; Any handful of foreign enemies who have come to trample us down is our inevitable defeat. This is because they had confidence, we didn't. Self-confidence, i.e. respect, needs to be inculcated in the hearts of Indians.
Disillusioned by subjugation, we falsely believe that we are weak, that we have no autonomy. Respect will be lost in such a state of mind. True respect must be rekindled in our hearts, self-confidence revived. Because then we will be able to solve all the problems of the country by ourselves.
So, believe in self-power, and by that belief stand tall. This is what is needed now. "We are ever-pure-free souls. It is absolutely impossible for us to commit any misdeeds." — want such faith. It is because of this faith that your humanity, even divinity, will be revealed. Believe, each of you is born to do great things. Each of you has to believe that everyone else in the world has done their part to build an ideal world-civilization, only your part remains to be done. This is exactly how all Indians should be aware of the responsibility of starting duty.
The sheer lack of seriousness—a light-hearted tendency to laugh off anything, the slightest or the slightest—has become an inadvertent mental disorder in our society. This disease must be eradicated. Stand up like a hero with respect for self-strength - then whatever is desirable for the welfare of the country will surely come.
Lack of independence:
At present, a helpless child-like optimism has taken possession of our entire national character. Everyone is ready to enjoy the food when it is brought to the mouth. Some are not happy with it either, they are satisfied when others dissolve it inside the gullet. But no one deserves to live if he cannot be self-reliant. Always remember that every nation must be self-reliant in matters of self-defense; The same is true of individuals. Don't expect help from others. Never rely on foreign aid. This is true patriotism. If any nation is unable to do this, understand His national independence is still too late. He has no choice but to wait.
Lack of obedience:
Everyone wants to give orders, no one is ready to take orders. In ancient times there was a wonderful practice of celibacy. If you get used to following orders, you will be qualified to give orders. First learn to be a servant, only then can you become a master. If Gurujan asks you to jump into the river and catch a crocodile, first of all follow his orders, then argue later. Even if an order is unjust, obey it first and then protest.
Obedience in all other matters while keeping one's religion intact practice Respectful submission to devotees is different. The forces do not coalesce; As a result, no major work can be completed.
Tamsikata:
We are verbose; Just words. Our motto is “We are great, we are great.” Nonsense! Actually we are Hinavirya. This is our nature. Like parrots in many respects, we utter a few words, but cannot turn any of them into action. It has become our nature to talk at length but do nothing. We have been arguing with each other for hundreds of years about which side of the forehead to cut tilak. Whether our food is impure in the eyes of people, I have been writing baskets of scriptures on these strange topics.
In fact, we are a lazy, inactive, uncooperative, self-interested people devoid of brotherly love. Not even three people can be united without hating or envying each other. A chaotic, disorganized, highly selfish mass—that is the nature of our present deplorable condition. Such lack of energy is a sign of our weak brain. So it is absolutely necessary to strengthen the brain today.
Lack of organizational capacity:
We have absolutely no organizational capacity. But it has to be incorporated into our national life. Jealousy is the main strategy for gaining this power. Will always be ready to accept the opinion of fellow brothers, will always try to compromise with them. Where is the source of organizational power? Well, what are four million Englishmen doing to rule thirty million people in this country? How did they become so powerful? What is the psychological reason? These four crores of Englishmen combined their individual wills to form a formidable force; And thirty million of you are each carrying your own separate little willpower. So the only strategy to build India's glorious future is unity, energy, unity of purpose. A wonderful verse from the Atharva Veda Samhita comes to mind: "Let your hearts be one, let your resolve be one; in ancient times the gods were united and could accept the sacrifices. The reason that the gods are worshiped by people is because they are united." Unity is the root of national strength. Pranijas and Aryas Brahmins and non-Brahmins—the more you quarrel and fight over such trifling matters, the more you lose the energy-gathering necessary to build the future of India. Remember, the whole scattered will of the nation must be concentrated, and upon this your glorious future entirely depends.
Lack of integrity in business:
How undisciplined and untidy the Hindus are in business matters. It is as if they do not have enough practice to keep proper accounts. We still haven't mastered the basic principles of trading. This is why joint venture efforts in this country are often fruitless. Business is essentially business - no room for camaraderie or showmanship. It is necessary to keep a perfect account of all the goods under their supervision. Even if you have to die without eating, you should not break the money of one fund and spend it on another. This is honesty in business. With this, I want unfailing activity. Every act of worship should be done in reverent solitude.
Lack of human love:
No person or nation can live by hating others. Look, India's downfall started the day Indians learned to denigrate foreigners by creating the word 'Mlechch'. Actually love can never fail. Be it today or tomorrow or a hundred years later, truth will win, love will win. Now think about it, do you love people?