পর্ব - ৪ গ
আদর্শ পদ্ধতি
একাগ্রতা ও অনাসক্তি :
জ্ঞান আহরণের মাত্র একটি উপায় আছে। নিম্নতম প্রাকৃত ব্যক্তি হইতে সর্বশ্রেষ্ঠ যোগীকে পর্যন্ত ঐ একই উপায় অবলম্বন করিতে হয়। একাগ্রতাই সেই উপায়। গবেষণাগারে কোন বস্তু বিশ্লেষণ করিতে গিয়া যখন রসায়নবিদ তাঁহার সমূদয় ধীশক্তি সেই বস্তুর উপর কেন্দ্রীভূত করেন, তখনই তিনি উহার রহস্যভেদ করিতে সমর্থ হন। জ্যোতির্বিদ তাঁহার মনঃশক্তি একাগ্র করিয়া যখন দূরবীক্ষণের মাধ্যমে সুদূর আকাশে প্রক্ষেপ করেন, তখন সূর্য, চন্দ্র, গ্রহ, নক্ষত্র প্রভৃতির নিগূঢ় তথ্য তাঁহার কাছে উদ্ঘাটিত হয়।
একমাত্র ধীশক্তির অভিনিবেশের দ্বারাই পৃথিবীর জ্ঞানভাণ্ডার পূর্ণ হইতেছে, অপর কোন পদ্ধতিতে নয়। দুনিয়ার যাবতীয় তথ্য আমাদের করতলগত হইতে পারে, যদি আমরা বিশ্ব-রহস্যের দ্বারে প্রয়োজনানুযায়ী আঘাত করিতে পারি। ঐ আঘাতের শক্তি এবং প্রখরতা নির্ভর করে মনঃসংযোগের উপর। মানব মনের ক্ষমতা অসীম। মন যতই একাগ্র হয়, ততই অধিকতর ধীশক্তি বিষয়বিশেষে কেন্দ্রীভূত হয়। ইহাই জ্ঞানভাণ্ডার সমৃদ্ধ করিবার কৌশল।
একাগ্রতার ফলে একজন সাধারণ মুচিও জুতা-পালিশের কাজে অধিকতর নৈপুণ্য দেখাইতে পারে; একজন পাচকও উৎকৃষ্টতর আহার্য প্রস্তুত করিতে পারে। অর্থোপার্জনেই বল, অথবা ভগবানের আরাধনায় বল, কিংবা অন্য যে-কোন কাজে বল, একাগ্রতা যত বাড়িবে কাজও তত সুষ্ঠুভাবে নিষ্পন্ন হইবে। বস্তুতঃ এই একাগ্রতাই কৌশল, যাহা বিশ্ব-প্রকৃতির রহস্য-সৌধের দ্বারোন্মোচন করিয়া জ্ঞানালোকের অবাধ বিকিরণ ঘটাইতে পারে। ইহাই যেন জ্ঞান-ভাণ্ডারের একমাত্র চাবি।
ধ্যানের সামর্থ্য বাড়াইবার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের প্রত্যাহারের দক্ষতাও বাড়াইতে হইবে। কোন বিষয়ে মনের একান্ত অভিনিবেশই আয়ত্ত করিলে শুধু চলিবে না, ঐ ছোয় বিষয় হইতে নিমেষে মন প্রত্যাহৃত করিয়া ইচ্ছানুযায়ী অপর কোন বিষয়ে সংলগ্ন করিবার ক্ষমতাও আমাদের অর্জন করিতে হইবে। মনকে যুক্ত ও বিযুক্ত করিবার ক্ষমতা সমভাবে পরিপুষ্ট হইলেই জীবনের পথ সুগম হইবে।
এই উভয়বিধ শক্তির বিকাশেই হয় মনের রীতিমত সম্প্রসারণ। আমার মতে শিক্ষার সারাংশ মনঃসংযোগ, ঘটনাসংগ্রহ হয়। আমাকে যদি পুনরায় শিক্ষা গ্রহণ করিতে হইত এবং শিক্ষাক্রম নির্দেশ করিবার অধিকার আমার থাকিত, তাহা হইলে গোড়াতে আমি তথ্য সংগ্রহ একেবারেই করিতে যাইতাম না। প্রথমে একাগ্রতার ও প্রত্যাহারের শক্তিদ্বয় পরিপুষ্ট করিয়া মনটিকে একটি নিখুঁত যন্ত্রে পরিণত করিতাম, এবং পরে উহার সাহায্য নিজের খুশীমত তথ্য সংগ্রহ করিতে প্রবৃত্ত হইতাম।
ব্রহ্মচর্য :
প্রত্যেক বালককে পূর্ণ ব্রহ্মচর্য পালন করিতে শিক্ষা দেওয়া উচিত; তবেই তাহার অন্তরে বিশ্বাস এবং শ্রদ্ধা জাগ্রত হইবে। পূর্ণ ব্রহ্মচর্যের অর্থ চিন্তায়, বাক্যে ও কর্মে সর্বদা সর্বাবস্থায় শুচিতা রক্ষ করা। সংযমের অভাবে আমাদের দেশে যাহা কিছু বরণীয় সবই লোপ পাইতে বসিয়াছে। কঠোর ব্রহ্মচর্য পালনের ফলে স্বল্প সময়ে যাবতীয় শিক্ষা আয়ত্ত করা যায়। একবার মাত্র যাহা শুনা বা জানা যায়, তাহার স্মৃতি অটুট থাকে। ধৃতরেতা ব্যক্তির মস্তিষ্ক অমিত তেজ ও বিপুল ইচ্ছাশক্তির আধার। ভোগবাসনার সংযমের ফল অতিশয় শুভ। যৌনশক্তিকে আত্মিক শক্তিতে রূপান্তরিত করিতে হইবে। শক্তি যত প্রবল হইবে, তাহার দ্বারা তত বেশী কাজ সাধিত হইতে পারে। খরস্রোত জলধারাকে সংযত করিবার ফলেই হয় প্রচণ্ড জল-বিদ্যুৎশক্তির উদ্ভব।
শ্রদ্ধা :
যথার্থ শ্রদ্ধার ভাবটি আমাদের মধ্যে আবার ফিরাইয়া আনা অবশ্য প্রয়োজন। মানুষে মানুষে শক্তির তারতম্য নির্ভর করে তাহাদের শ্রদ্ধার তারতম্যের উপরই অপর কিছুর উপর নয়। এই শ্রদ্ধাই কাহাকেও মহৎ, কাহাকেও দুর্বল ও হীন করে। যে দিবারাত্র বসিয়া ভাবে সে কিছু নয়, তাহার দ্বারা কাহারও কোন কল্যাণ সাধিত হইতে পারে না। সর্বক্ষণ যদি কেহ চিন্তা করে যে, সে ক্ষুদ্র হতভাগ্য নগণ্য এক জীব, তাহা হইলে সে তাহাই হইয়া যায়। আমরা সর্বশক্তিমান ভগবানের সন্তান, তাঁহার অনন্ত দিব্য তেজের এক একটি স্ফুলিঙ্গ; আমরা নগণ্য কেন হইব? আমরা সর্বাত্মক, আমরা সব কিছু করিতে প্রস্তুত এবং সব কিছু করিবার ক্ষমতা আমাদের মধ্যে বর্তমান। এরূপ আত্মবিশ্বাস আমাদের পূর্বপুরুষগণের হৃদয়ে ছিল, আর এই শ্রদ্ধার বলেই তাহারা সভ্যতার অভিযানে অগ্রসর হইতে পারিয়াছিলেন। যেদিন ভারতবাসী এই আত্মশ্রদ্ধা হারাইয়াছে, সেইদিন হইতে শুরু হইয়াছে ভারতের জাতীয় জীবনে অবনতির পালা। তাই ব্যধির জ্বলন্ত আত্মবিশ্বাসের উপরই যে জাতির অগ্রগতি সম্পূর্ণ নির্ভর করে, এই সুমহান, প্রাণপ্রদ চমৎকার তত্ত্বটি তোমাদের সন্তান-সন্ততিকে আশৈশব শিখাইতে হইবে।
চরিত্র:
এখন আমাদের প্রয়োজন চরিত্র-গঠন, অর্থাৎ ইচ্ছাশক্তিকে প্রবল করা। পুনঃ পুনঃ ইচ্ছাশক্তি প্রয়োগ করিলেই জীবনের ঊর্ধ্বায়ন ঘটে। বাস্তবিক, ইচ্ছাশক্তির প্রভাব অপরিসীম। একমাত্র চরিত্র বা ইচ্ছাশক্তিই বাধাবিপত্তির বজ্রদৃঢ় প্রাচীর বিদীর্ণ করিতে পারে।
মানুষের চরিত্র তাহার মনের প্রবণতা বা সংস্কাররাশির সমষ্টিমাত্র। আমাদের ভাবনাই আমাদের স্বভাব গড়িয়া তোলে। বাস্তবিক, চিন্তার বিনাশ নাই, এবং উহা বহুদূর প্রসারী। অতএব কি চিন্তা করিতেছ, সেই বিষয়ে সতর্ক থাকিও। আমাদের প্রত্যেকটি ক্রিয়া, প্রত্যেকটি দেহস্পন্দন, প্রত্যেকটি চিন্তা আমাদের চিত্তে একটি ছাপ বা সংস্কার রাখিয়া যায়। চিত্তের উপর মুদ্রিত এই ছাপগুলির সমষ্টিই যে-কোন মুহূর্তে আমাদের তৎকালীন স্বভাব নির্ধারিত করে। বস্তুতঃ এই ছাপগুলির সমষ্টিই প্রত্যেক ব্যক্তির চরিত্রের নির্ণায়ক। সৎ সংস্কার প্রবল হইলে চরিত্র হয় সৎ, অসৎ সংস্কার প্রবল হইলে উহা হয় অসৎ।
অনেকগুলি ছাপ মনে জমা হইলে উহারা একত্রিত হইয়া একটি অভ্যাসে পরিণত হয়। কু-অভ্যাসের একমাত্র প্রতিকার উহার বিপরীত কোন অভ্যাসের অনুশীলন। নিজের যাবতীয় কু-অভ্যাস সামগ্রিকভাবে সদভ্যাস দ্বারা প্রতিরোধ করিতে হইবে। ভাল কাজ করিয়া যাও, অনবরত পবিত্র চিন্তা করিতে থাক কেবলমাত্র এই উপায়েই নিকৃষ্ট সংস্কারগুলিকে দমন করিতে পারিবে।
আর এক কথা। অনুকূল ও প্রতিকূল উভয় প্রতিবেশই চরিত্রগঠনে সমভাবে সহায়ক; বরং কোন কোন ক্ষেত্রে সুখ অপেক্ষা দুঃখই শিক্ষা দেয় বেশী। আমি জোর করিয়া বলিতে পারি, জগতের মহৎ চরিত্রগুলি আলোচনা করিলে দেখা যাইবে যে, অধিকাংশের ক্ষেত্রে সুখ অপেক্ষা দুঃখ, ঐশ্বর্য অপেক্ষা দারিদ্র্যই অধিক শিক্ষা দিয়াছে, এবং লোকের প্রশংসা অপেক্ষা সংসারের কঠিন ঘাত-প্রতিঘাতগুলিই তাহাদের অন্তর্নিহিত তেজ বেশী প্রকট করিয়াছে। বিলাসের ক্রোড়ে প্রতিপালিত হইয়া, আরামের শয্যায় শয়ন করিয়া, কিছুমাত্র অশ্রুপাত না করিয়া কেহ কখনও মহিমান্বিত হইয়াছে কি?
গুরুকুল-প্রথা :
শিক্ষা বলিতে আমি বুঝি গুরুগৃহ বাস। আচার্যের ব্যক্তিগত জীবনের সংস্পর্শ ছাড়া শিক্ষা হয় না। ছেলেবেলা হইতেই এমন একজনের সহিত থাকা উচিত, যাঁহার চরিত্র প্রজ্বলিত অগ্নির মত ভাস্বর। ছাত্রের সম্মুখে থাকা চাই সর্বোচ্চ শিক্ষার এইরূপ একটি জীবন্ত দৃষ্টান্ত। আমাদের দেশে চিরকাল ত্যাগী ব্যক্তিরাই বিদ্যাদান করিয়া আসিয়াছেন। পুনরায় বিদ্যাদানের তার ত্যাগীদেরই লইতে হইবে।
ভারতের প্রাচীন শিক্ষাপদ্ধতি ও বর্তমান পদ্ধতির মধ্যে আকাশ-পাতাল প্রভেদ। তখন ছাত্রদের অর্থব্যয় করিতে হইত না। সেকালে ধারণা ছিল, জ্ঞান এতই পবিত্র বস্তু যে উহা বিক্রয় করা উচিত নয়; তাই বিনিময়ে কিছু গ্রহণ না করিয়া অকৃপণভাবে জ্ঞানদান বিষের। আচার্যগণ ছাত্রদের নিকট হইতে অর্থ ত লইতেনই না, বরং অধিকাংশ আচার্য তাহাদিগকে আহার এবং বন্ধাদিও জোগাইতেন। ধনাঢ্য ব্যক্তিগণ এই সকল আচার্যের জীবিকা নির্বাহের জন্য উপযুক্ত অন্নদান করিতেন, এবং আচার্যদেরও বিদ্যার্থীদিগকে পালন করিতে হইত। শিক্ষকের কোন প্রকার স্বার্থাভিসন্ধি, ধন বা নামযশের লিপ্সা থাকা উচিত নয়। শিক্ষক তাঁহার কাজে ব্রতী হইবেন শুধু মানব-সাধারণের প্রতি বিশুদ্ধ প্রেমের প্রেরণায়।
প্রাচীনকালে শিষ্য সমিংপাণি হইয়া গুরুর আশ্রমে উপস্থিত হইত। সেখানে তাহার শিক্ষাগ্রহণের যোগ্যতা বুঝিয়া গুরু তাহাকে বেদ শিক্ষা দিতেন। আচার্যের প্রতি আন্তরিক বিশ্বাস, বিনয়, আনুগত্য এবং শ্রদ্ধা ব্যতীত শিষ্যের কোন উন্নতি হইতে পারে না। এই ধরণের গুরু-শিষ্য সম্পর্ক বর্তমানে যে সব দেশে নাই সেখানে শিক্ষক মাত্র একজন বক্তা হইয়া দাঁড়াইয়াছেন; তাঁহার নজর পারিশ্রমিক অর্থের উপর আর ছাত্রের নজর শিক্ষকের বচন দিয়া মগজ ভর্তি করার উপর। গুরু-শিষ্যের এই উভয়বিধ চাহিদা পূরণের মধ্যেই তাহাদের সম্পর্ক সীমাবদ্ধ।
যে ব্যক্তি অবলীলাক্রমে ছাত্রের মানসিক স্তরে নামিয়া আসিতে পারেন, যিনি ছাত্রের সহিত অনন্যমনা হইয়া তাহার দৃষ্টিভঙ্গী অনুযায়ী সকল বিষয় বুঝিতে পারেন, তিনিই যথার্থ শিক্ষক। এইরূপ শিক্ষকই খাঁটি শিক্ষা দিতে পারেন—অপর কেহ নয়।
বিদ্যার্থীর একান্ত প্রয়োজন শুচিতা, প্রকৃত জ্ঞানতৃষ্ণা এবং অধ্যবসায় । চিন্তায়, বাক্যে ও আচরণে পবিত্রতা অত্যাবশ্যক। আমাদের আন্তরিক চাহিদা একদিন না একদিন পূরণ হইবেই—এই পরিচিত নৈসর্গিক বিধানটি অনুধাবন করিলে ছাত্রজীবনে প্রকৃত জ্ঞানতৃষ্ণার সার্থকতা বুঝিতে পারা যাইবে। বস্তুতঃ আমরা কিছুই লাভ করিতে পারি না, যদি না আমরা অন্তর দিয়া উহা চাই। ছাত্রজীবনে অধ্যবসায়ের প্রয়োজন সর্বজনবিদিত। অধ্যবসায়ী বিদ্যার্থীর সাধনায় সিদ্ধিলাভ সুনিশ্চিত।
মনস্তাত্ত্বিক দৃষ্টিভঙ্গী :
গাধাকে পিটাইয়া ঘোড়া করা যায় শুনিয়া এক ব্যক্তি তাহার গাধাটিকে প্রহার করিতে করিতে ঘায়েল করিয়াছিল। ঠিক ঐভাবে প্রহার করিয়া ছাত্রদের মানুষ করার পদ্ধতিটি তুলিয়া দিতে হইবে। দেখ, কেহ কাহাকেও শিক্ষা নিতে পারে না; শিক্ষক যদি মনে করেন যে তিনি শিখাইতেছেন, তবে তিনি সব মাটি করিয়া বসিলেন। বেদান্তের মতে সমস্ত জ্ঞান মানুষের অন্তরেই রহিয়াছে। বালকের ভিতরেও তাহাই। প্রয়োজন কেবল ঐ জ্ঞান উদ্বুদ্ধ করা। আর এইটুকু শিক্ষকের কাজ। চারাগাছকে যেমন টানিয়া বাড়ান যায় না, শিশুকেও সেইরূপ জোর করিয়া শিক্ষিত করা যায় না। শিক্ষকের কাজ শুধু প্রতিবন্ধকগুলি সরাইয়া শিশু-মনের ক্রমবিকাশে সাহায্য করা। অন্তরায়মুক্ত হইলে শিশুর অন্তর্নিহিত জ্ঞান আপনি স্ফূর্ত হইবে। গাছের বেলায় মাটি একটু আলগা করিয়া দিতে হয়, যাহাতে সহজে অঙ্কুরোদ্গম হয়; চারাগাছটির চারিধারে বেড়া দিতে হয়, যাহাতে কোন কিছুতে উহা মারিয়া না ফেলে। মালীর কাজ ঐ পর্যন্তই। কিন্তু গাছটির পরিপুষ্টি উহার প্রকৃতির ব্যঞ্জনা। শিক্ষাক্ষেত্রে শিক্ষকের কাজ ঐ মালীর মত। আর ছাত্রের জ্ঞানোন্মেষ চারাগাছের বৃদ্ধির মত প্রাকৃতিক বিধান অনুযায়ী স্বতঃই ঘটে।
-------------------------------------------------------------------
Part- 4C
Ideal Methods
Concentration and Detachment:
There is only one way to acquire knowledge. From the lowest Prakrit person to the greatest yogi, the same method has to be adopted. Concentration is the way. When the chemist goes to analyze a substance in the laboratory and concentrates all his energies on that substance, he is able to unravel its mysteries. When the astronomer concentrates his mind and projects it into the distant sky through the telescope, the mysterious information of the sun, moon, planets, stars etc. is revealed to him.
The world's storehouse of knowledge is being filled only by the infusion of Dhisakti, and not by any other method. All the information of the world can be at our fingertips, if we can hit the door of world-mystery as needed. The strength and intensity of that blow depends on the mindset. The power of the human mind is infinite. The more the mind is concentrated, the more energy is concentrated on the subject. This is the strategy of enriching the knowledge base.
By concentration an ordinary cobbler may show greater skill in shoe-polishing; A digester can also prepare better food. Say it in earning money, or say it in worship of God, or say it in any other work, the more the concentration increases, the more smoothly the work will be done. In fact, this concentration is the technique, which can open the door to the mysteries of nature and cause the free radiation of enlightenment. This is the only key to the storehouse of knowledge.
As we improve our meditation skills, we also need to improve our withdrawal skills. It is not only possible to master a single focus of the mind on a subject, but we also have to acquire the ability to immediately withdraw the mind from that subject and attach it to another subject at will. The path of life will be smooth only if the ability to connect and disconnect the mind is equally strengthened.
In the development of these two powers, the mind is naturally expanded. According to me the essence of education is mind-association, collection of facts. If I had to do the education again and had the right to dictate the curriculum, I would not have gone to collect data at all in the first place. First I would make the mind a perfect instrument by strengthening the powers of concentration and withdrawal, and then I would tend to gather information with its help at my pleasure.
Celibacy:
Every boy should be taught to observe perfect celibacy; Only then will faith and respect be awakened in his heart. Purna brahmacharya means to maintain purity in thought, word and deed at all times. Due to lack of moderation, everything that is good in our country is disappearing. As a result of strict celibacy one can master all learning in a short time. What is heard or known only once, its memory remains intact. The brain of a Dhritareta person is a reservoir of immense brilliance and great will power. The results of moderation of indulgences are very good. Sexual energy has to be transformed into spiritual energy. The stronger the power, the more work it can accomplish. Damping of torrential water creates tremendous hydroelectric power.
Respect:
It is necessary to bring back in us the feeling of proper respect. The variation of power from man to man depends on the difference of their respects and nothing else. It is this respect that makes someone great, someone weak and inferior. He who sits day and night thinking is nothing, no good can be achieved by him. If one always thinks that he is a small wretched insignificant creature, then he becomes that. We are the children of Almighty God, a single spark of His infinite divine radiance; Why should we be insignificant? We are omnipotent, we are ready to do anything and we have the power to do anything. Such confidence was in the hearts of our forefathers, and it was because of this respect that they were able to advance in the journey of civilization. From the day Indians lost this self-respect, the turn of deterioration in India's national life began. Therefore, on the burning confidence of the nation, on which the progress of the nation depends entirely, this noble, lively and excellent theory should be taught to your children.
Character:
Now we need character-building, i.e. strengthening the will. Repetitive exercise of willpower leads to life's upliftment. In fact, the effect of willpower is immense. Only character or willpower can break through the thunderous wall of obstacles.
A man's character is the sum total of his mind's tendency or Sanskarashi. Our thoughts make us who we are. Actually, there is no annihilation of thought, and it is far reaching. So be careful what you think. Every action we take, every movement of our body, every thought leaves an impression or reformation on our mind. It is the sum of these imprints on the mind that determines our current disposition at any given moment. In fact, it is the sum of these impressions that determines the character of each person. If honest reforms prevail, the character becomes honest, if dishonest reforms prevail, it becomes dishonest.
When many impressions accumulate in the mind, they combine to form a habit. The only remedy for a bad habit is the practice of an opposite habit. All one's bad habits should be prevented by good habits as a whole. Do good deeds, keep thinking holy thoughts, only in this way can the evil reforms be suppressed.
One more thing. Both favorable and unfavorable environments are equally conducive to character formation; Rather, in some cases, sorrow teaches more than happiness. I insisted Pari, if we discuss the great characters of the world, it will be seen that in the case of most of them, sorrow has taught more than happiness, poverty has taught more than wealth, and the harsh blows of the world have brought out their inner brilliance more than the praise of people. Has anyone ever been raised in the blood of luxury, sleeping in a bed of comfort, without shedding a single tear?
Gurukul-Pratha:
When I say education, I mean Gurugriha. There is no education without contact with the personal life of the Acharya. From childhood one should be with one whose character is like a blazing fire. Such a living example of the highest education is desired to be in front of the student. In our country, the self-sacrificing people have always been teaching. Only those who have given up on education should be taken back.
There is stark difference between ancient Indian education system and current system. Then students did not have to spend money. At that time, knowledge was so sacred that it should not be sold; So imparting knowledge mercilessly without receiving anything in return is poisonous. Acharyas not only took money from the students, but most of the Acharyas also provided them with food and clothing. Wealthy people provided adequate food for the livelihood of these acharyas, and the acharyas also had to support the students. A teacher should not have any kind of selfishness, desire for wealth or fame. The teacher will be committed to his work only out of pure love for humanity.
In ancient times, the disciple used to come to the Guru's ashram as Samingpani. There the Guru used to teach him the Vedas after understanding his merit for learning. Without sincere faith, humility, obedience and respect for the Acharya, no progress can be made by the disciple. In countries where this type of teacher-pupil relationship does not exist, the teacher is only a speaker; His eye is on the reward money and the student's eye is on filling the brain with the words of the teacher. Their relationship is limited to meeting these dual needs of guru-disciple.
The person who can come down to the mental level of the student without fail, who can be unique with the student and understand everything according to his point of view, is the right teacher. Only such a teacher can give authentic education—no one else.
Purity, genuine thirst for knowledge and perseverance are the absolute needs of the student. Purity in thought, word and behavior is essential. Realizing this well-known natural law, our sincere needs will be fulfilled one day or the other, one can understand the worth of true thirst for knowledge in student life. In fact, we cannot gain anything unless we want it from our heart. The need for perseverance in student life is well known. A diligent student is assured of success in his pursuits.
Psychological Perspective:
Hearing that a donkey can be beaten into a horse, a man tried to beat his donkey. The method of beating students like that should be removed. Look, no one can teach anyone; If the teacher thinks that he is teaching, then he sits down. According to Vedanta, all knowledge resides within the human heart. It is the same inside the boy. It is only necessary to inculcate that knowledge. And this is the teacher's job. Just as a plant cannot be forced to grow, a child cannot be educated by force. The teacher's job is only to help the child-mind develop by removing obstacles. If the obstacles are free, the inner knowledge of the child will be spontaneous. The soil should be loosened a little during the planting, so that germination takes place easily; The surrounding of the sapling should be fenced, so that nothing kills it. The work of the gardener is until then. But the nourishment of the tree is a reflection of its nature. A teacher's job in education is like that of a gardener. And the student's quest for knowledge takes place automatically according to natural laws like the growth of plants.